রায়পুরে ঋণের কিস্তি আদায়ে জোর করলেই আইনী ব্যবস্থানজরুল ইসলাম দিপু, ৬জুন:
রায়পুরে এনজিও’রা ঋণ প্রদানে বাঁধা নেই, কিস্তি দিতে চাইলে নিতে পারেন, জোর করে আদায় করলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরীন চৌধুরী।
জানা যায়, করোনা মহামারির মধ্যেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কিস্তির টাকা আদায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এনজিও সংস্থাগুলো। যেখানে কোন রকম খেয়ে পরে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ছে মানুষের সেখানে গ্রাহকদেরকে নানাভাবে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে চাপ দিচ্ছে তারা।
মুঠোফোনেও কল করে কিস্তির টাকা পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করছে এনজিওর মাঠকর্মীরা।
হয়রানীর শিকার গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রায়পুর ইউএনও সাবরীন চৌধুরী ১৬ এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরী সভা করেন। এসময় গ্রাহকদেরকে কিস্তির টাকা পরিশোধে চাপ না দেয়ার জন্য এনজিও কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।
তিনি বলেন, করোনার এই মহামারী পরিস্থিতি থাকা পর্যন্ত কোনো গ্রাহককে কিস্তির টাকার জন্য কোনো প্রকার চাপ দেয়া যাবে না এবং ফোন দিয়ে কিস্তির টাকার জন্য হয়রানি করা যাবে না। যে সকল গ্রাহকের কিস্তির টাকা দেয়ার সামর্থ আছে তারা এনজিওর অফিসে গিয়ে কিস্তির টাকা জমা দিবে। আর যারা পারবে না তাদের কোনো প্রকার চাপ দেয়া যাবে না। যাতে গ্রাহকরা কোনো প্রকার হয়রানীর শিকার না হয় সেজন্য সকল এলাকায় মাইকিং করারও নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, কোনো এনজিও কর্মকর্তা যদি এ নির্দেশ মোতাবেক কাজ না করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্ষুদ্র ঋণের সুদ আদায় কার্যক্রম ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিতাদেশ মর্মে গত ২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখের একটি পরিপত্রের মাধ্যমে স্পষ্টীকরণ করা হয়। তবে এ সময়ে ঋণ বিতরণে কোন বাধা থাকবে না। আর কেউ স্বেচ্ছায় কিস্তি পরিশোধ করতে চাইলে তা করতে পারবে।
পরবর্তীতে ০৯ মে এবং সর্বশেষ ১০ মে, ২০২০ তারিখে ‘সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করা’ প্রসঙ্গে দুটি ভিন্ন পত্র এনজিও প্রতিনিধির কর্তৃক উপজেলা প্রশাসনের নিকট দাখিল করা হয়েছে এবং সেপ্রেক্ষিতে কিস্তি পরিশোধে বাধ্য না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
ইতোমধ্যে রায়পুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের তৃণমূল পর্যায়ের অসহায় ঋণগ্রহীতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সকল এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরী সভা আহবান করা হয়। উদ্ভুত সমস্যা নিরসনে করোনা পরিস্থিতিতে ৩০ জুন পর্যন্ত অসহায় ঋণগ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে বাধ্য না করে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে কেউ স্বেচ্ছায় কিস্তি পরিশোধ করতে চাইলে তা করতে পারবে বলে জানান ইউএনও সাবরীন চৌধুরী।