মেহেদি হাসান পাবেল
এরিস্টটল বলেছেন,
“শিক্ষার শেকড়ের স্বাদ তেতো হলেও এর ফল মিষ্টি”।
যে কোন দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
শিক্ষার মাধ্যমে জনসংখ্যা জনসম্পদে পরিনত হয়ে থাকে।মানুষের মধ্যে উদ্ভাবনী শক্তি ও অসংখ্য গুনাবলী সুপ্ত অবস্থায় থাকে। শিক্ষার মাধ্যমে গুনাবলী বিকশিত হয়।শিক্ষা মানুষকে মূল্যবোধ ও জ্ঞান দান করে আর এ জ্ঞান ও বুদ্ধির কারনে মানুষ পৃথিবীর সেরা জীব।
মহামারীর এই প্রাক্কালে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি হুমকির মুখে রয়েছে৷ কোভিড-১৯ এর কারনে মার্চ মাস থেকে চালু হওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার লকডাউন এখনো চলমান। যদিও বৃহওর স্বার্থে এটা যুগপযোগী সিদ্ধান্ত কিন্তু শুধু শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করতে গেলে এর বেহাল চিত্র ফুটে উঠে।
স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করতে গেলে অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়।
কোচিং বানিজ্য, বিদ্যা অর্জনের চেয়ে রেজাল্ট এর দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, মুখস্থ বিদ্যার আধিক্য আরও নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা তো রয়েছে।
মহামারীর এই সময়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা শিক্ষা ব্যবস্থার স্থবিরতা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো দীর্ঘদিন যাবৎ ছুটি তে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস এর মাধ্যমে যে পাঠদান চলছে সেটা অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ডাকার মত। পরিপূর্নভাবে ক্লাসে থেকেও যখন সঠিক ভাবে বিদ্যা অর্জন এর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা থেকে যায় অনেক ক্ষেত্রে সেখানে অনলাইনের এই পাঠদান আদৌ কি বিদ্যা অর্জন হচ্ছে একটা প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। যাই হোক শুধুমাত্র শিক্ষাবর্ষটাই শেষ হচ্ছে আদৌতে। পরিপূর্নভাবে না শিখেই উর্ওীন হয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা উল্লেখ করতে গেলে ছোট ছোট বাচ্চাদের শিখানো জানানোর ব্যপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সাধারনভাবে বাচ্চাদের শিক্ষার ব্যাপারে অনেক কষ্ট সিদ্ধির ব্যাপার আছে৷ বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে অনেকটা জোরপূর্বক স্কুলে যাওয়া,পড়তে বসা এই ব্যাপারগুলো বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু মহামারী এর এই সময়ে সকল প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকায় কোমলময়ী শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ শিক্ষা গ্রহন থেকে দূরে রয়েছে। যদিও সরকার তাদের জন্য নানাবিধ প্রদক্ষেপ নিয়েছে দিন শেষে প্রশ্ন টা হলো আমাদের অভিভাবকরা কি আসলেই সচেতন ( সবার ক্ষেত্রে না ) প্রাথমিক শিক্ষার সরকার এর নেওয়া প্রদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে পালন করছে!
মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করতে গেলে সাধারনভাবে ছাত্র ছাত্রীদের জিপি -এ ফাইভ এর পিছনে ছুটার, কোচিং বানিজ্য এই ব্যাপারগুলো তো রয়েছে। এই বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য নানাবিধ সমস্যা তো রয়েছে। অবাধ্যতা, অমনোযোগীতা, টেকনোলজির আধিক্য এই সবকিছুর সাথে যুদ্ধ করে স্কুলে যাওয়া টাই অভিভাবকদের ক্ষেত্রে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছিল। লকডাউনে, শিক্ষা ব্যবস্থার সাধারণ ছুটি এই শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ প্রযুক্তি আশক্তি খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে।বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দের উদাসীন মনোভাব খুব স্বাভাবিক ভাবে চিত্রিত হচ্ছে।
উচ্চ মাধ্যমিক এর ক্ষেত্রে এর অবস্থা টা মাধ্যমিক এর অনুরুপ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটেছে।বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এর মধ্যে খাপছাড়া ভাব স্পষ্টত বুঝা যাচ্ছে।
শিক্ষাই সর্বোওম বিনিয়োগ একমাত্র সুশিক্ষার মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নতি সম্ভব। লকডাউন এর কারনে শিক্ষা ব্যবস্থার যে অতুলনীয় ক্ষতিসাধন হয়েছে তা পুষিয়ে উঠা সম্ভব সঠিক পরিকল্পনা ও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন এর মাধ্যমে। শিক্ষা মানুষের এর দিগন্তকে প্রসারিত করে। দেশের শিক্ষা বিভাগ সু সংগঠিত ও সফল হলে অন্যান্য সকল বিভাগ সহজেই সফল হবে।
দুর্দিন খুব শীঘ্রই কেটে যাবে। শিক্ষাই ঐক্য, শিক্ষাই মুক্তি। শিক্ষা বিভাগের নীতি নির্ধারকরা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শিক্ষা ব্যবস্থা বেহাল দশা কাটিয়ে মুক্ত হয়ে দেশের উন্নতির পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
শিক্ষাই হচ্ছে মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যে থাকা উৎকর্ষের প্রকাশ, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড “।
শিক্ষার্থী
নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়
কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং