ইকবাল হোসেন বাবু, ২০ মার্চ:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৯নম্বর ভোলাকোট ইউনিয়নের পাঁচ কিলোমিটার সড়কে সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নাগমুদ, টিওরী, শাহারপাড়া,দেহলা, আথাকরা গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র সড়কটিতে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার, সড়কের পাশ কমানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয় লোকজন অনিয়মের অভিযোগ করলে, তারা ভালোভাবে কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দিলেও কাজে এখনো অনিয়ম হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম, এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ ফখরুল হোসেন অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে জানান, সড়কের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেছি এবং আমরা কিছু অনিয়ম পেয়েছি।
নাগমুদ, দেহলা এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০৫ সালে এই সড়ক নির্মিত হয়। দীর্ঘদিন সড়কটিতে কোন প্রকার সংস্কার না হওয়ায় জন-ভোগান্তির প্রায় ১৬ বছর পর সড়কটির একাংশের উত্তর নাগমুদ কচু মার্কেট ব্রীজের সামনে থেকে পঁচা মার্কেটের ব্রীজের সামনে পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
দরপত্রসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কাজটি পান, মেসার্স রিপন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুষ্ক মৌসুমেই এই সড়কের সংস্কার কাজ করার জোর দাবি থাকলেও ঠিকাদার ধীরগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে কাজে অনিয়ম করার জন্যই তিনি ধীরগতি অবলম্বন করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবী ঠিকাদারকে এই সংস্কার কাজে অনিয়মে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সার্ভেয়ারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ভোলাকোট ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ কাউসার আলম সুমন, ইউপি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন রকি, ছাত্রলীগ নেতা ইমদাদ হোসাইন সাকিলসহ অনেকেই জানান, কাজের শুরু থেকে অনিয়ম করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। সড়কের প্রসস্থতাও কমিয়েছে। সড়কের ঢালু অংশের মাটি না চেপে যেনতেনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের পাশের মাটি ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে কাজে বাধা দিলে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ থাকলেও অনিয়ম অব্যাহত রয়েছে। এসব অনিয়মের সঙ্গে এলজিইডির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীও সম্পৃক্ত।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন জানান, আমাদেরকে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য এক গাড়ি ইট আর দুই গাড়ি খোয়া দেওয়া হয়েছে। এতো কম মালামাল দিয়ে কাজ করতে আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে, তার জন্য আমরা দীর্ঘদিনের পুরাতন ইট ও খোয়া ব্যবহার করছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিপন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধীকারী মোঃ রিপন হোসেন জানান, কাজের সিডিউল অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোন অনিয়ম হচ্ছে না।
লক্ষ্মীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফখরুল হোসেন জানান, সড়কের কাজে কোনো প্রকার অনিয়ম হতে দেওয়া যাবে না। স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন। যার কারণে আমরা সরেজমিনে গিয়ে কাজ ঠিকমতো করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।