মাহমুদ ফারুক, ৩ এপ্রিল: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ ও চন্দ্রগঞ্জ এলাকায় মারিয়া আক্তার (১১) ও আইরিন আক্তার (১৮) নামের এক কলেজ ছাত্রীর ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধায় চন্দ্রগঞ্জ বাজারের পোষ্ট অফিস সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসার জানালার গ্রীলে গলায় ফাঁস লাগানো ও শুক্রবার রাতে রামগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মিঝি বাড়ীর নিজ বসতঘর থেকে রামগঞ্জ মডেল বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী আইরিন আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মারিয়া আক্তার পাঁচপাড়া গ্রামের আহম্মদ আলী পাটোয়ারী বাড়ির কুয়েত প্রবাসী মোঃ শাহজাহানের বড় মেয়ে। তারা চন্দ্রগঞ্জ বাজারের মহিন মিয়ার ৫তলা বিল্ডিংয়ের ২য় তলায় ভাড়া থাকত। মারিয়া স্থানীয় আলহাজ¦ ইব্রাহিম মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শেণীর ছাত্রী।
মারিয়ার মা জানায় দুপুরে খাবার শেষে মারিয়া তার রুমে যায়, আমি আর ছোট ছেলে আরিয়ানকে নিয়ে অন্য রুমে ঘুমিয়ে পড়ি। আছরের নামাজের সময় মারিয়াকে নামাজ পড়ার জন্য ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীকে ডেকে আনি এবং বাহিরের জানালা দিয়ে তারা দেখে মারিয়া জানালার গ্রীলের সাথে ঝুলে আছে। খবর পেয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার এস আই আব্দুর রহিম সঙ্গীয় ফোর্সসহ এসে দরজা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করেন।
লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল ) মিমতানুর রহমান ও চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে ফজলুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর মিঝি বাড়ীর নুর হোসেনের কলেজ পড়–য়া মেয়ে আইরিন আক্তার শুক্রবার গভীর রাতে নিজ বসতঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা যায়। রামগঞ্জ থানার এস আই অলি উল্যাহ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর হসপিটাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ব্যপারে রামগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এদিকে আইরিন আক্তারের সাথে বিয়ে হয়েছে দাবী করে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ওমর ফারুক হিমু জানান, আইরিন ২০২০ইং সনের ৫ অক্টোবর বাড়ী থেকে পালিয়ে আমাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে ৩লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন এবং ঢাকায় আমার আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করি। বিয়ের কয়েকদিন পর স্থানীয়ভাবে মিমাংসার কথা বলে আইরিন আক্তার বাবা মা নিজ জিন্মায় নিয়ে কয়েকমাস পর আমাকে তালাক দিতে বাধ্য করায়। তালাকের পর থেকে আইরিন আক্তার মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
কলেজ ছাত্রী আইরিন আক্তারের মা জেসমিন আক্তার জানান, গত দুই মাস থেকে আমার মেয়ে আইরিনের মানসিক রোগ দেখা দিলে আমরা অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়েছি। কিন্তু কোন কিছুই হয়নি। আর আমার মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা সঠিক নয়।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, আইরিন আক্তারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর হসপিটাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যপারে রামগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্য মামলা হয়েছে।