শাখাওয়াত হোসেন সাকা, ৪ এপ্রিল: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ জনপদের অধিকাংশ পাশ্ব সড়কগুলোর বেশিরভাগই বেহালদশা। দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ার কারনে সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে গিয়ে বেশিরভাগ অংশেই বিশালাকৃতির গর্ত ও বালিতে সয়লাভ হয়ে পড়েছে। এতে উক্ত সড়কগুলো দিয়ে চলাচল করতে সাধারণ মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই।
সরেজমিনে রামগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর করপাড়া, ৭ নম্বর দরবেশপুর, ৬ নম্বর লামচর, ৩ নম্বর ভাদুর, ৫ নম্বর চন্ডিপুর, ৯ নম্বর ভোলাকোট, ১০ নম্বর ভাটরা, ৪ নম্বর ইছাপুর, ১ নম্বর কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়কের এ চিত্র দেখা গেছে।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের আবদুর রব জানান, আমাদের ওয়াপদা বেড়িবাঁধ সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলিত। কারো যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই। সংস্কার না হওয়ার কারনে সড়কের বেশিরভাগ অংশেই বিশাল বিশাল গর্তে পরিনত হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, হাট-বাজারে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সর্বস্তরের লোকজন অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন সড়কগুলোর দৈন্যদশার কারনে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আরো জানান, বছরের পর বছর ধরে সংস্কার না করায় সড়কগুলো দিয়ে চলাচলে অবর্নণীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
করপাড়া থেকে রামগঞ্জ শহরে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে আসা শাখাওয়াত হোসেন সাকা, মাসুদ আলম, মোঃ জহিরসহ কয়েকজন জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চলতে হচ্ছে। সড়কে বড় বড় গর্ত। প্রায় ১৫ বছর যাবত এ এলাকার সড়ক সংস্কারে কারো নজর নেই। সড়কগুলোর কার্পেটিং নেই, বালিতে ত্রাহি অবস্থা। একটি গাড়ী যাওয়ার পর ধুলোর কারনে সব অন্ধকার হয়ে যায়। সড়কড়গুলোর পাশের নির্মিত হওয়া বাড়ীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।
ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও সিএনজি অটোরিক্সা চালক মোস্তফা মিয়া, হালিম ড্রাইভার, আবদুল বারেক জানান, যাত্রী ও মালামাল নিয়ে গাড়ি চালাতে খুবই কষ্ট হয়। উঁচু-নিচু গর্তের কারনে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয় সড়কগুলো দিয়ে।
স্কুল শিক্ষক মোঃ রফিক উল্যাহ জানান, এখন শুকনো মওসুম। কোনরকম চলাচল করা যায়। সামনে বর্ষাকাল। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কগুলো দিয়ে চলাচলে পোহাতে হবে মারাত্মক দূর্ভোগ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জনপ্রতিনিধি জানান, সরকারী বরাদ্ধ অপ্রতুল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করার পরও আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। গ্রামের রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। বালুর কারনে সড়কে চলাচল দুস্কর হয়ে পড়ছে।
১নম্বর কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানান, আমার ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে কিছু সড়ক সংস্কার হয়েছে। খুব শীগ্রয় বরাদ্ধ পেলে বাকী কাজগুলো শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
এছাড়া কয়েকজন চেয়ারম্যান দাবী করেছেন, আমরা নিজেরাই ব্যক্তিগত অর্থায়নে কয়েকটি সড়ক সংস্কার করেছি। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই না। আমরা এমপি মহোদয়ের কাছে আমাদের চাহিদা প্রেরণ করেছি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুর রহমান বলেন, এই বিষয়ে নতুন করে একটি কর্মপরিকল্পনা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরবর্তি নিদের্শনা ও অর্থ বরাদ্ধ দিলে কাজ শুরু করা হবে। প্রতিবছর যে বাজেট হয় ঐ বাজেটে ৮ থেকে ১০ টি সড়ক সংস্কার করা যায়। একটি উপজেলায় এলজিইডির সড়ক হওয়ার কথা একশো, আর এ উপজেলায় আছে পাঁচ শতাধীক। সেজন্য আমাদের আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তবে আশা করছি আগামী বাজেটের পর জরাজীর্ণ সড়কগুলো সংস্কার করা হবে।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপ্তি চাকমা জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলো সংস্কার করা দ্রুত দরকার। জন দূর্ভোগের বিবেচনায় সংস্কারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।