মাহমুদ ফারুক:
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সারাদেশে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। এ সুযোগে রমরমা বানিজ্যে মেতে উঠেছে প্রাইভেকার, অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস ও ছোট ইঞ্জিনচালিত যানবাহনগুলোর চালক ও মালিকপক্ষ।
পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাস ভাড়ার কয়েকগুণ বেশি টাকা খরচ করে অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেকার, মাইক্রোবাসে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ। জেলা সদর থেকে উপজেলা শহরে যাতায়াতরত সিএনজি বা ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা চালকদেরও পোয়াবারো।
আগে নন-এসি বাসে ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা শহরে জনপ্রতি ভাড়া ছিল ৩ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা। এসি বাসে ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ টাকা। বাস বন্ধের সুযোগে বর্তমানে একই রাস্তায় নোহা মাইক্রো বা অ্যাম্বুলেন্সে জনপ্রতি ১ থেকে দেড় হাজার, প্রাইভেটকারে গেলে গুণতে হচ্ছে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। এছাড়া মোটরসাইকেলে করেও অনেকে ঈদে বাড়ীতে আসছেন।
সরেজমিনে লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ খাদ্য গুদাম ও বাইপাস সড়কে গিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কে আগে সর্ব্বোচ্ছ প্রাইভেটকার ভাড়া ছিলো সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, নোহা মাইক্রোবাস ছিলো সাড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার আর অ্যাম্বুলেন্স ছিলো সাড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৬হাজার টাকা। লকডাউনের কারনে এখন সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকার নীচে পাওয়া যাচ্ছেনা প্রাইভেটকার। অ্যাম্বুলেন্স, নোহাগাড়ি বা মাইক্রোবাস ভাড়া ১৭ হাজর থেকে ২০ হাজার টাকা। এ ভাড়া কেবল একমুখী অর্থাৎ শুধু যাওয়ার বা আসার ভাড়া। প্রতিদিন অর্ধশত অ্যাম্বুলেন্সে করে যাত্রীরা আসা যাওয়া করছেন গভীর রাত পর্যন্ত।
আবদুস সালাম নামের এক যাত্রী বলেন, ঢাকা থেকে রামগঞ্জে আসার সময় সরাসরি কোন গাড়ি পাইনি। তাই ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ৫জন ঢাকা থেকে রামগঞ্জে আসার জন্য সাত হাজার টাকা দিয়ে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করি। এতে জনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ বাড়ীতে আসতে ফেরেছি, এটাই বড় পাওনা।
ঢাকা থেকে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুর আসা একটি নোহা গাড়িতে দেখা গেছে, গাদাগাদি করে ১৭ জন যাত্রী নিয়ে যেতে। গুণতে হচ্ছে জনপ্রতি সিট ভাড়া ১ থেকে দেড় হাজার টাকা।
পথিমধ্যে যাত্রা বিরতিতে ওই গাড়ির যাত্রীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, বাস বন্ধ। এ সুযোগে প্রাইভেকার, মাইক্রোবাস চালক ও মালিকরা রমরমা ব্যবসা করছে। তিন গুণ ভাড়া বেশি দিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ীতে যাচ্ছি। আর বাস কাউন্টারগুলোর সামনে বসে আছেন কয়েকজন এজেন্ট বা দালাল। ভাড়া নিয়ে তাদের সাথেই কথা বলতে হয়।
নোহা গাড়ির চালক আকবর হোসেন জানান, ২৮ বা ২৯ রমজানে এই ভাড়া বেড়ে জনপ্রতি হবে তিন হাজার টাকা। এত বেশি ভাড়া হলেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। এটা ব্যক্তিগত গাড়ি হিসেবেই রাস্তায় চলছে।
এদিকে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে জানান, আমার এক আত্মীয় অসুস্থ্য। ঢাকায় নেয়া দরকার ছিলো। অথছ কোথাও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও দেখা যায় দুই বা তিনগুন বেশি ভাড়া। আগে ঢাকার কোন হসপিটালে যেতে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পড়তো ৫ থেকে সাড়ে ৫হাজার টাকা। এখন ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা। তাও পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে আর কতদিন চলবে জানিনা।