মাজেদ হোসেন: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর জেলা পরিষদ ডাকবাংলো থেকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও ইউপি সদস্যসহ ৮জুয়াড়ীকে গ্রেফতার করেছেন জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। শনিবার রাতে জুয়া খেলা অবস্থায় রায়পুর শহরের কয়েকজন ব্যবসায়কে আটক করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ রায়পুর জেলা পরিষদ ডাকবাংলো যেন জুয়ার আখড়ায় পরিনত হয়েছে। প্রতি রাতেই বসে জুয়ার আসরসহ অসামাজিক কার্যক্রম। আটককৃত জুয়াড়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়েও ভয় পেতো।
বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলা অবস্থায় তাদের আটক করেন।
আটককৃতদের আজ রোববার দুপুরে জুয়া আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, মোঃ কামাল হোসেন (৪৮), রায়পুরের সোনাপুর ইউপি সদস্য ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৬), ব্যবসায়ী আদুল্যাহ আল মামুন (৩০), ডাক বাংলোর কেয়ারটেকারের ছেলে মোঃ আল-মামুন (৩৫), ফজলুল হক (৫২), মোঃ রাসেল (৩৯), মোঃ বিল্লাল হোসেন (৩৩) ও জামাল হোসেন (৩৮)।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রায়পুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল কাদের রিয়াজের কাছ থেকে সাড়ে তিন বছর আগে ডাকবাংলোর ইজারা বাতিল করে জেলা পরিষদ কতৃপক্ষ নিজেরাই লোক দিয়ে পরিচালনা করছেন জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। সেখানে বিয়ে ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দিবসের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। বর্তমানে ভবনের দোতলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভ্রাম্যমান ছোট ব্যবসায়ীরা ভাড়ায় বসবাস করছেন। তার পাশেই ডাকবাংলোর আবাসিক কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাগন রাত যাপন করে থাকেন। বাংলোর পেছনের দুটি কক্ষে পরিবার নিয়ে বসবাস করে তত্বাবধায়ক বিল্লাল হোসেন।
অভিযোগ রয়েছে বিল্লালের ছেলে মোঃ আল মামুনের সযোগিতায় স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট সারা রাত জুয়ার আসর বসায়। এ জুয়ার আসরে জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাসহ চিহ্নিত জুয়ারীরা সারা রাত মেতে থাকেন। মাদকের আড্ডা বসে বলেও দাবী করেন অনেকেই। এবিষয়ে স্থানীয়রা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানালেও কোন সমাধান হয়নি।
শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়ান্দা সংস্থা (ডিবি) বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৮জুয়াড়ীকে আটক করায় স্থানীয় জুয়াড়ীদের মাঝে আতংক দেখ দেয়।
রায়পুর জেলা পরিষদের তত্বাবধায়ক বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি মসজিদে ছিলাম। এ সম্পর্কে কিছুই আমার কিছু জানা নেই।
লক্ষ্মীপুর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) ওসি আজিজুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদ পেয়ে এক মেম্বারসহ ৮ জুয়াড়ীকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা কুল প্রদীপ চাকমা বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নাই। আজকেই সংবাদ পেলাম। জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি জড়িত থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।