আনিস কবির:
লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাট ফেরি ও লঞ্চ ঘাটের ইজারা নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক পৃথক দুই ইজারাদারের পক্ষ নিয়ে ঘাট দখলকে কেন্দ্র করে বর্তমানে স্থানীয় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে লাঞ্চনার শিকার হন বিআইডব্লিউটিএ এর চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক এ.কে.এম কায়সারুল ইসলাম। সংঘঠিত ঘটনায় ঘাট এলাকায় চলমান বিরোধ প্রকাশ্যে রুপ নিয়ে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর ফেরি ঘাট এলাকার দুই কিলোমিটার স্থানীয় জেলা পরিষদ মালিকানা দাবী করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ৯০ লাখ টাকা ইজারা দেয়া হয়। গত বুধবার ইজারাদার ইসমাইল হোসেন পাঠানকে (ঠিকাদার) ঘাট দখল বুঝিয়ে দেয় জেলা পরিষদ কর্তপক্ষ। এসময় তার পক্ষে অবস্থান নেন আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুর জব্বার লাবলু ও রাকিব হোসেন লোটাসসহ অনেকে।
অন্যদিকে গত ২৮ জুন চলতি অর্থবছরের জন্য মোট ৫৪ লাখ টাকা ইাজারা মূল্য নির্ধারণ করে বিআইডব্লিউটিএ এর বন্দর ও পরিবহন বিভাগের চাঁদপুর কার্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইজারা নেন জনৈক শিমুল চক্রবর্তী। তারপক্ষে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা নজরুল ইসলাম ভুলু, সৈয়দ নুরুল আজিম বাবর, মাহমুদুন নবী সোহেল, যুবলীগ নেতা রুপম হাওলাদারসহ অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে ঘাট এলাকার দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা কায়সারুল ইসলাম ঘাট এলাকা ইজারাদারকে বুঝিয়ে দিতে ঘটনাস্থলে আসলে জেলা পরিষদের কাছ থেকে ইজারা নেয়া পক্ষ কর্তৃক লাঞ্চনার শিকার হন বলে জানান। একই সঙ্গে সরকারের নতুন গেজেট অনুযায়ী জেলা পরিষদ ও বিভাগীয় কমিশনার ঘাট ইজারা দেয়া নিয়ম বহির্ভূত বলে দাবী করেন তিনি। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, আগের নিয়ম অনুযায়ী জেলা পরিষদ থেকে ইজারা দেয়া হয়েছে। নতুন কোন নির্দেশনা পাননি বলে জানান তিনি।
দুই ঠিকাদারকে একই ঘাট দুই কর্তৃপক্ষ ইজাড়া দেয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এঘটনার বিচার দাবী করেন বিআইডব্লিউটিএ থেকে ইজারা নেয়া শিমুল চক্রবর্তী।
এদিকে ঘটনা অস্বীকার করেন অপর ইজারাদার ইসমাইল হোসেন পাঠান।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন জানান, দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান পুলিশি হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। হামলা ও লাঞ্চনার বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।