নিজস্ব প্রতিবেদক: রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের আথাকরা আহমদিয়া মাদ্রাসার সুপার আবদুল মালেক ও মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হোসেনের ভাই কাজী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় উক্ত মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায় সরকারীভাবে সারা বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষামূখি করতে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।
জানুয়ারী ২০২১ ইং থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রতি শিক্ষার্থীদের মোবাইল বিকাশে ৬ মাসের কিস্তি ১২শ টাকা জমা হয়।
৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীর অভিভাবক লাইলী বেগম জানান, মাস প্রতি ২শ টাকা হারে ৬ মাসের টাকা জমা হলে আথাকরা আহমদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুল মালেকের বরাত দিয়ে মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই কাজী জাকির হোসেন আমাকে মোবাইলে কল দিয়ে শনিবার সকাল ১১টায় বিকাশ একাউন্টযুক্ত মোবাইল ফোন ও সাথে ৩শ টাকা নিয়ে মাদ্রাসায় আসতে বলেন।
সেখানে আসার পর কাজী জাকির হোসেন জানান, উপবৃত্তির সব টাকা তুলতে হলে আপনাকে ৩শ টাকা দিতে হবে। এ কথা বলে একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন।
একই অভিযোগ করে অন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক আলমগীর হোসেন জানান, রামগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের খরছসহ অনলাইনের খরছ বাবত ৩শ টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন কাজী জাকির হোসেন। এসময় তিনি আরো জানান, ৩শ টাকা না দিলে তার সন্তান দাখিল পর্যন্ত উপবৃত্তির টাকাসহ সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হতে পারে শিক্ষার্থীরা। রহিমা বেগম নামের একজন অভিভাবকও একই অভিযোগ করেন।
এ ব্যপারে মাদ্রাসা সুপার আবদুল মালেক জানান, আমি কোন শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে ফোন দেইনি। তাছাড়া ২৬জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির আওতায় আনতে কাজী জাকির হোসেন অনেক পরিশ্রম করেছেন। প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাড়ীতে ২/৩বার করে যেতে হয়েছে। সেখানে কিছু খরছ হতে পারে। এসময় তিনি শিক্ষার্থী প্রতি ৩শ টাকা নেয়ার কথা সত্য নয় বলে জানান।
এ ব্যপারে মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই কাজী জাকির হোসেন বলেন, এসব শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন করতে অনলাইন খরছসহ অফিস খরছের ব্যপার রয়েছে। তবে শিক্ষার্থী প্রতি ৩শ টাকা নেয়ার বিষয়টি তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
আথাকরা আহমদিয়া মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হোসেন জানান, আমাকে কমিটির কয়েকজন সদস্য ও অভিভাবকগণ বিষয়টি অবগত করেছেন। আর মাদ্রাসা সুপার ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা সমন্বয় করে আমাকে বিষয়টি জানালে ভালো হতো। তাহলে আমরা সরকারী অনলাইন ফি’র টাকা মওকুফ করে নিজেরাই মাদ্রাসা থেকে সে টাকা পরিশোধ করতে পারতাম। অনেক গরীব শিক্ষার্থী রয়েছে যারা ফরম পুরুনের টাকাও ঠিকমতো দিতে পারেনা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোনাজের রশিদ জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো এবং আগামী দুই একদিনে সরেজমিনে মাদ্রাসায় যাবো। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।