মাহমুদ ফারুক:
জেলার রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘরে ঘরে সর্দি ও জ¦রের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে। সরকারী হসপিটাল ও প্রাইভেট হসপিটালে জ্বর এবং সর্দিতে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা হটাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানানো হয় গত একমাসে জ্বর সর্দি এবং কাশিতে আক্রান্ত আউটডোরে রোগীর সংখ্যা ১৫হাজার, ভর্তি ছিলেন প্রায় ৭শতাধিক রোগী। এছাড়া একমাসে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০জন। আজ শনিবার (২৪ জুলাই) একদিনে (শুক্রবার নমুনা সংগ্রহ) রিপোর্ট অনুযায়ী ৪৬ জনের নমুনা সংগ্রহে ২৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হসপিটালের চিকিৎসকগণ জানান, বৃষ্টি ও আবহাওয়ার ভীন্নতর আচরনের কারনে এমনটা হতেই পারে। তবে কয়েকদিন পর্যন্ত ওষুধ খাওয়ার পরও জ¦র না কমায় বেশ কিছু রোগীকে করোনা পরীক্ষার জন্য বলা হলেও কেউ তা মানছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান, রামগঞ্জ শহরের উপর তার বাসভবনটি পাঁচতলা বিশিষ্ট। তার পরিবারের ৪ সদস্য গত ১ সপ্তাহ থেকে জ¦র ও ব্যথায় ভুগছেন। একই অবস্থা ঐ ভবনের প্রায় পরিবারে। প্রতি পরিবারের ৩/৪জন জ্বর সর্দিতে আক্রান্ত। মোবাইল ফোনে ডাক্তারদের সাথে কথা বলে বাসায়ই চিকিৎসা নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।
একটি বে-সরকারী কোম্পানীতে চাকুরিরত ইকবাল হোসেন জানান, তার ৮ মাস বয়সী শিশুকে বিভিন্ন চিকিৎসক চিকিৎসা দেয়ার পরও শারিরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কুমিল্লার একটি হসপিটালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আনোয়ার হোসেন নামের এক গৃহকর্তা জানান, আমার স্ত্রী জ্বর সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ার পর দেখা প্রচণ্ড ডায়েরিয়া। স্ত্রীকে বার বার বলা হলেও সরকারী হসপিটালে যেতে রাজি নন। বাধ্য হয়ে একটি বে সরকারী ক্লিনিকের চিকিৎসকের সাথে কথা বলে ওষুধ সেবন করিয়েছি। স্ত্রী সুস্থ হওয়ার পর একই অবস্থা স্কুল পড়ুয়া মেয়েটির। জোর করেও সরকারী হসপিটালে নিতে পারিনি পরিবারের সদস্যদের।
এস এম সোহেল নামের রামগঞ্জ বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, আমার গ্রামের অধিকাংশ বাড়ীতে জ্বর ও সর্দির রোগী বেশি। তাদেরকে বলা হচ্ছে সরকারী হসপিটালে যাওয়ার জন্য, কিন্তু তারা কেউই সরকারী হসপিটালে যেতে চাচ্ছেন না। সরকারী হসপিটালে গেলে তাদেরকে নাকি বলা হয় করোনা পরীক্ষা করতে হবে। করোনা পরীক্ষার ভয়ে কেউ সরকারী হসপিটালে যেতে চায় না।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ মোঃ মানিক হোসেন জানান, গত ১ মাসে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত ১৫ হাজারের অধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রায় ৮শ রোগী হসপিটালে ভর্তি ছিলেন। প্রতিদিনই আউটডোর ইনডোরে জ্বর সর্দিতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে ভীড় করছেন। গত একমাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০জন। গতকাল শুক্রবার রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা সংগ্রহ করার পর আজকে রিপোর্ট এসেছে। ৪৬জনের নমুনা পাঠানোর পর ২৬জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রওশন জামিল জানান, হসপিটালে রোগীর সংখ্যা হাউসফুল। বেশিরভাগই জ¦র, সর্দি, ব্যথা, পেট ব্যথা ও অন্যান্য রোগী। হসপিটালে উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার পরও জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত অনেক রোগী করোনার নমুনা দিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিরুপ পরিস্থিতি এড়াতে ১০ বেডের সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আইসোলশন সেন্টার প্রস্তুত রয়েছে।