মাহমুদ ফারুক:
মাত্র ২ কিলোমিটার সড়ক। রামগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৎস্য অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাচন কার্যালয় ও রামগঞ্জ মডেল মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় নিজেই এখন রোগীতে পরিনত হয়েছে।
সড়কটির অধিকাংশ এলাকাজুড়ে খানাখন্দে ভরা। কোথাও কোথাও রাস্তা দেবে গিয়ে পানি চলাচলও করতে দেখা গেছে। মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের এমন দৈন্যদশার কারনে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত রোগীদের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।
যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, উক্ত সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। যে কোন দিন এ সড়কটির কাজ শুরু করা হবে। তবে কবে নাগাদ এ দূর্ভোগ থেকে পরিত্রান পাবে প্রায় সাড়ে ৫লক্ষ জনগণ অধ্যুষিত রামগঞ্জ উপজেলা সেবাগ্রহীতারা তার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
করোনার নমুনা দিতে আসা ইখতেয়ার শাকিল জানান, হসপিটালে এসেছি করোনার নমুনা দিতে। এ সড়ক দিয়ে আসার পর এখন মনে হচ্ছে হসপিটালেই ভর্তি হতে হবে। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যথায় সয়লাভ। পথিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে আমাকে বহনকারী অটোরিক্সাটি। বাধ্য হয়ে বাকী পথ হেঁটেই এসেছি।

রামগঞ্জ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আরাফাত জানান, আমার বয়স হওয়ার পর থেকেই দেখে আসছি এ সড়কটিতে গর্তে সয়লাভ। কখনো এ সড়কটি ব্যবহার করে শান্তি পাইনি। হেঁটেও যাওয়া যায় না-রিক্সায় করেও না। এ থেকে কবে পরিত্রান পাবো জানিনা।
রামগঞ্জ উপজেলা সার্ভার ষ্টেশন ও নির্বাচন অফিসে আসা নোয়াগাঁও গ্রামের ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, রামগঞ্জ পুলিশ বক্স চৌরাস্তা থেকে উপজেলা পরিষদ অফিসে যেতে রিক্সা ভাড়া নিতো ১০ টাকা। বর্তমানে ত্রিশ টাকা দিলেও রিক্সাচালক ঘ্যান ঘ্যান করে। কোন কোন চালকতো এ সড়কে আসতেই চান না।
এ ব্যপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি)ও নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদ উল হাসান জানান, আমরা রামগঞ্জ মডেল মসজিদ সড়ক থেকে সরকারী হসপিটাল সড়ক হয়ে গার্লস স্কুল পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মানের জন্য ১ কোটি ২২লক্ষ টাকা চাহিদা দিয়েছি। আইআরআইডিপি প্রজেক্টের আওতায় এ সড়কটি নতুন করে সিসি ও পিচঢালাইয়ের জন্য ইতোমধ্যে বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। অনলাইনে টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ মাসের ২৪ তারিখ টেন্ডার ড্রপের শেষ তারিখ।
রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী জানান, সড়কটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় থেকে ১ কোটি ২৫লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ রামগঞ্জ সরকারী হসপিটাল ও উপজেলা পরিষদ সড়কসহ পৌরসভার সাতারপাড়া-নন্দনপুর গ্রামের ১ কিলোমিটার সড়ক নির্মানেও প্রায় ৯৩লক্ষ টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই কাজ শুরু হবে। তবে আগামী তিন মাসের ভিতরে কাজ শুরু হবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা দিতে পারেননি মেয়র।