মাহমুদ ফারুক:
মাত্র ২ কিলোমিটার সড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়ক জুড়ে খানাখন্দে ভরা। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে শারিরীক ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। তার উপর স্থানীয় লোকজনের মাছ চাষের কারনে পুকুর পাড়ের গাছপালা ভেঙ্গে পানিতে পড়ার কারনে কোথাও কোথাও সড়কটি সরু হয়ে সাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া আকু আলী মার্কেট থেকে হোটাটিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কের চিত্র।
এসময় স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় ১৫ বছর পূর্বে ৯নম্বর ভোলাকোট ইউনিয়নের নোয়াপাড়া আকু মার্কেট থেকে ২নম্বর নোয়াগাঁও ইউনিয়নের হোটাটিয়া বাজারে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি পিচঢালাই দিয়ে নির্মান করা হয়।
নির্মানের পর থেকে অধ্যাবদি কোন জনপ্রতিনিধি সড়কটি সংস্কার তো দুরের কথা উপরুন্ত স্থানীয় ব্রীকফিল্ড মালিকদের সাথে আঁতাত করে ট্রলি চলাচলে সহযোগীতা ও মাটি বিক্রি করে সড়কের দফারফা করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় লোকজন ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, নোয়াপাড়া আকু মার্কেট থেকে হোটাটিয়া বাজারের দুরুত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। এ দুই কিলোমিটার সড়ক এলাকায় বারঘরিয়া, শিংবাইস, আশাপুর, হোটাটিয়া ও শৈরশৈসহ ৫টি গ্রামের দেড়শ পরিবারের প্রায় ১২/১৩ হাজার মানুষ বসবাস । উপজেলা সদর বা অন্য কোথাও যেতে হলে এ সড়কটির বিকল্প নেই। কিন্তু সড়কের দৈন্যদশার কারনে মানুষের চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঢাকার বঙ্গবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী শোহরাব হোসেন জানান, আমাদের গ্রামের পাশ^বর্তি এলাকায় দুইটিসহ মূল সড়কের পাশে ৫টি ব্রীকফিল্ড। এ ব্রীকফিল্ডগুলোর কারনে প্রতিদিন শতাধীক ট্রলি চলাচল করে। ট্রলির চাকার কারনে ভাঙ্গা সড়কগুলোতে বিশাল বিশাল গর্তে সয়লাভ। এলাকাবাসী খুবই কষ্টে আছেন বিকল্প কোন সড়ক না থাকার কারনে।
অটোরিক্সা চালক ও নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ সিরাজ মিয়া জানান, সড়কটির কারনে আমরা রিক্সা চালাতে পারিনা। একবার গেলে নাটবল্টু খুলে যায়। অনেক সময় দুইটি রিক্সা একসাথে পারাপার হতে গিয়ে পুকুর বা সড়কের পাশের ডোবানালাতে পতিত হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হতে হয়। ট্রলি চলাচলের কারনে সড়কটিতে খানাখন্দে ভরা। ট্রলি চলাচলে বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের হুমকি দেয়।
নোয়াপাড়া আকু মার্কেটের ব্যবসায়ী সিদ্দিক উল্যাহ জানান, শুধুমাত্র সড়কটি ভাঙ্গাচুরার কারনে ব্যস্ত এ বাজারটিতে এখন মানুষের আসা বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা রাজনীতিবিদসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে সড়কটি সংস্কারের বার বার গেলেও তারা আমাদের কোন আশ^াস দিতে পারেননি। এছাড়া নোয়াপাড়া পুরান বাড়ীর মঞ্জুরুল ইসলাম উক্ত সড়কে দূর্ঘটনায় কবলিত হয়ে ঢাকার একটি হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন রানা জানান, সব দফতরেই যোগাযোগ করেছি। কিন্তু সড়কগুলো সংষ্কারে কোন বাজেট বরাদ্ধ আনতে পারিনি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যদি কিছু হয়।
ভোলাকোট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূইয়া জানান, আগের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কোন কাজ হয়নি অত্র ইউনিয়নে। এখন প্রায় মেয়াদ শেষ, এ মুহুর্তে আমার হাতে করার কিছুই নেই।
এ ব্যপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদ উল হাসান জানান, রামগঞ্জ উপজেলায় এত পাকা সড়ক যে আমরা তা সংষ্কারের হিমশিম খাচ্ছি। তালিকা ধরে ধরে পর্যায়ক্রমে সকল সড়ক পূর্ণনির্মান ও সংষ্কার করা হবে ইনশাল্লাহ।