নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড, যা বর্তমানে বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড। একসময় বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে অত্র উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন থাকলেও বর্তমানে রামগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়টি গো-চারনভূমিতে পরিনত হয়েছে।
দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় কচু গাছ, ঝোঁপ জঙ্গলে একাকারসহ ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে অত্র কার্যালয়ের মূল্যবান মালামাল।
স্থানীয় লোকজন উক্ত কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ইট সুরকি নিয়ে গেছে বহু আগেই। কেউ কেউ নিরাপদ আস্তানা হিসাবে গরু ছাগলের খোয়াড় তৈরি করে দিব্যি কাজ করে গেলেও এ যেন দেখার কেউ নেই।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় মাদক সেবী ও জুয়াড়ীদের নিরাপদ আস্তানা হিসাবেও রাতের আঁধারে ভীড় লেগে থাকে। রাত নামলেই অপ্রীতিকর ঘটনাস্থল হিসাবেও জানান কেউ কেউ।
সৌদি থেকে বাড়ীতে অবস্থানরত এ এইচ এম ইব্রাহিম ব্যপারী নামের একজন জানান, একসময় আমরা যখন সৌদি আরবে চাকুরী করতাম তখন আমাদের বাবা মা আমাদের সাথে রামগঞ্জ উপজেলা টিএন্ডটি (বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন) অফিসে এসে কল দিতো। এখন আর সেদিন নাই। মোবাইল ফোনের যুগে এবং তার বিহীন ফোনের কারনে আমরা এখন ঘরে বসেই ভিডিও কলের মাধ্যমে বিশে^র যে কোন যায়গায় কথা বলতে পারি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ শাহজাহান জানান, আমিও দীর্ঘদিন দেশের বাহিরে ছিলাম। এখান থেকে বড় ভাই বা বাবা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাসেজ দিতো। মাদার সিরিয়াস কাম বা ফাদার সিরিয়াস কাম। এ ধরনের ম্যাসেজ সৌদি আরবে যে কোম্পানীতে চাকুরী করতাম, ঐ কোম্পানীর মালিককে দেখালে ছুটি দিতো কয়েকমাসের জন্য।
রামগঞ্জ সোনাপুর সড়কের ব্যবসায়ী আবুল খায়ের ভূইয়া জানান, ০৩৮২৪– এ ধরনের কোড দিয়ে আমরা আগে স্থানীয় টিএন্ডটি অফিসে কল করে বলতাম অমুক নম্বরে একটু দিন। তারপর অপারেটর সে নম্বরে লাইন দিতো। কত সুন্দর ছিলো আগের দিনগুলো। মোবাইল ফোনের কারনে এখন কেউ আর টিএন্ডটি অফিসে যায় না। সেদিন একটা কাজে টিএন্ডটি অফিসের পাশে গেলে হটাৎ নজরে পড়ে অফিসটি। দীর্ঘশ^াস ফেলি। গরু ছাগলের মলমূত্র, ঝোঁপজঙ্গল আর কচুগাছে সয়লাভ চারদিক। একসময় ভীড় লেগে থাকা অফিসটি এখন ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।
এ ব্যপারে গত তিনদিন অফিসটিতে গিয়েও কাউকে না পেয়ে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা জানান, আমি গত এক বছর এ উপজেলায় কর্মরত রয়েছি। লকডাউন আর করোনার কারনে এদিকে নজর দেয়া সম্ভব হয়নি। আমি সরেজমিনে গিয়ে সরকারী সম্পদ রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবগতসহ শীগ্রয় প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।