স্বাগতম সবাইকে। আজ চলে এলাম স্পিকার কেনার বিষয়ে কিছু কৌশল এবং পরামর্শের বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে। নিজের অভিজ্ঞতা এবং রিসার্চকে পুঁজি করেই সাজানো হয়েছে আজকের আয়োজনটি। স্পিকার কেনার সময় কিছু টেকনিক্যাল টার্মসের ব্যাপারে সকলেরই সতর্ক থাকা উচিত। যা অতি সহজেই স্পিকার বাছাই করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।
মনে রাখবেন, বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ স্পিকারই THX অনুমোদিত নয়। ফলস্বরূপ এগুলোর স্পেসিফিকেশনেও ভুল দেখা যায়।এক্ষেত্রে আপনাকে অনেক খুঁজে এবং পরীক্ষা করেই ভালোটি বের করতে হবে।
অনেকেই কোনো স্পিকার ভালো নাকি খারাপ তা জানতে চান। যদিও ভালো-খারাপ জিনিসটা বেশ আপেক্ষিক। আপনার চাহিদা, বাজেট অনেক কিছুর উপর নির্ভর করেই যাচাই-বাছাই করে বের করতে হবে কোন স্পিকারটি আপনার জন্য পারফেক্ট।
সবাই সবচেয়ে সেরা স্পিকারটি যেমন ৫০০০০ টাকা খরচ করে কিনতে পারবে না, তেমনই একেবারে পানির দামে যেনোতেনো পণ্য কিনেও কেউ ঠকতে চাইবে না। যারা বিভিন্ন অকেশনাল মিউজিক শোনার জন্য স্পিকার কিনতে চান, তেমন জোরে শোনা পছন্দ করেন না তারা একটি ২.১ সিস্টেমের স্পিকার কেনার প্ল্যান করতে পারেন। তবে যারা খুব জোরে মিউজিক শুনতে পছন্দ করেন কিন্তু মাঝে মধ্যে শোনেন তারা একটু দামি ২.১ বা ৪.১ সিস্টেম স্পিকার ব্যবহার করতে পারেন। মিউজিক, মুভি, গেইম ভালোবাসা ব্যাক্তিরা ৫.১ সিস্টেম স্পিকার ব্যবহার করলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। পাশাপাশি extreme লিসেনার হলে ৫.১ এর সাথে আরেকটি পাওয়ার্ড সাবউফার জুড়ে দিয়ে তা ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে সাউন্ড শোনার পাশাপাশি শরীরে অনুভব ও করতে পারবেন।
স্পিকার কেনার সময় যেসব টিপস কাজে লাগানো যায় সেসব হলোঃ-
হাই কোয়ালিটি(৩২০ কিঃবাঃপাঃসেঃ) কিছু পপ গানকে আপনার MP3 প্লেয়ার বা মোবাইলে (যদি ৩.৫ মিঃমি সকেট থাকে) নিয়ে স্পিকারের সাউন্ড কোয়ালিটি পরীক্ষা করে নিন। কেননা পরিচিত গান শুনলে পার্থক্যটা বেশ ভালোভাবেই আঁচ করা যায়। সাথে বেস (Bass) বা বিট পরীক্ষা করে নিন।
আপনার বাজেটের থেকে অতিরিক্ত কিছু টাকা নিয়ে নিন। এতে করে বাজারে গিয়ে অল্প কিছু টাকার জন্য একটি পছন্দের স্পিকার কেনা বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থেকে রেহাই পাবেন।
সবচেয়ে বেশি ভালো হয় বাজেটের কাছাকাছি দামের মধ্যে কিছু স্পিকার সিলেক্ট করলে। সবসময় মোটামুটি বড় আকৃতির উফার এবং সেটেলাইট আছে এমন স্পিকার সিলেক্ট করার চেষ্টা করুন।
স্পিকার কেনার পূর্বে তার সঠিক শো রুম বা দোকান খুঁজে বের করা খুবই জরুরি। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় আশেপাশে শব্দ কম এবং এসি নেই এমন দোকান সিলেক্ট করতে পারলে।
সেটেলাইটে টুইটার দেওয়া আছে এমন একটি স্পিকার বের করতে পারলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। এতে আপনি হাই ফিডেলিটি এবং অনেক ক্রিস্পি সাউন্ড উপভোগ করার সুযোগ পাবেন।
আপনার সাথে থাকা মিউজিগুলি চেক করে দেখুন। গানের ক্লেয়ারিটি এবং টোন ঠিক আছে কিনা তা লক্ষ্য করুন। সেলসম্যানরা সাধারনত তাদের প্রোডাক্ট সেলের জন্য অনেক জোরে সাউন্ড শোনায়। কিন্তু আপনি আস্তে আস্তে শুনে সাউন্ডের তার মান পরীক্ষা করুন। এক্ষেত্রে কোয়ালিটি পরীক্ষার জন্য ফুল সাউন্ড দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এসব উল্টাপাল্টা টিপস কাজে না লাগিয়ে ডাইমেনশনটি বের করার চেষ্টা করুন। মাথায় রাখবেন কখনোই ৩” এর নিচে সেটেলাইট আর ৫.২৫” এর নিচে সাবউফার কিনতে যাবেন না।
এবার সেটেলাইটের জ্যাক গুলো খুলে স্পিকারের সাবউফারটি পরীক্ষা করুন। এক্ষেত্রে সাথে থাকা মিউজিকগুলিকে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার মনঃপুত হওয়ার আগেই যদি স্পিকার থেকে ডিস্টরশান আসে তবে ঠিক তখনই এটি কেনার চিন্তা বাদ দিয়ে দিন। সব স্পিকার থেকেই কোনো এক সময় ডিস্টরশান আসে এবং তবে কম বা বেশি হলেও ব্যবহার করার সময় তা অনেক বিরক্তি সৃষ্টি করে। তাই তুলনামূলক কম ফেটে যাওয়া আওয়াজ আসে এমন স্পিকার কিনে ফেলুন।
স্পীকারে নয়েজ হয় কিনা তা পরীক্ষা করে নিন। কাজটি করার জন্য করার জন্য গান বন্ধ অবস্থায় স্পিকারের সেটেলাইট গুলোর কাছে কান নিন। দেখুন কোন ‘হিসসস’(একে বলে Hiss noise) করে শব্দের সৃষ্টি হয় কিনা। মনে রাখবেন ভালো স্পিকারে খুব কম হয় যা প্রায় শোনাই যায়না।
রিমোট কন্ট্রোল বা অন্য ফাংশনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে স্পিকার কেনা থেকে বিরত থাকুন৷ এই ফাংশন গুলোর জন্য দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে এটি কিনে অনেকেই বোকামি করেন। যাদের কোয়ালিটি পুরানো ব্র্যান্ডের তুলনায় অনেক ভালো সবসময় স্পিকার কেনার ক্ষেত্রে তাদের কোম্পানিকেই টার্গেট করুন।
শেষ কথা
BCS computer city, এলিফ্যান্ট রোড, স্টেডিয়াম ইত্যাদি হলো স্পিকার কেনার জন্য সেরা প্ল্যাটফর্ম। জেনে-বুঝে স্পিকার কিনতে পারলে তা ব্যবহার করে আরাম পাওয়া যায়।এছাড়াও আপনাদের জন্য দারুন সব স্পিকার সহ নানা ধরনের গাজেট আইটেম নিয়ে বাজারে সেবা দিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের ছেলে শাকিলের অনলাইন শপ শাকিলগ্যাজেট। প্রতিষ্ঠানটির ফিজিক্যাল শপ আছে মোতাল্লিব প্লাজায়। আশা করি এই কন্টেন্টটি আপনাকে নতুন এবং মানসম্মত স্পিকার কিনতে সাহায্য করবে। হ্যাপি রিডিং।