জহিরুল ইসলাম টিটু:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের হামছাদী-কাজীর দীঘিরপাড় আলিম মাদরাসার দশম শ্রেণীর ৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরকে আটক করেছে রায়পুর থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন এর মা সাহেদা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তদন্তে নামে পুলিশ। সরেজমিনে গিয়ে মাদ্রাসার সুপার, চুল কেটে দেয়া ছাত্র, তাদের অভিভাবক ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে কথা বলে সত্যতা পান বলেও নিশ্চিত করেছেন রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক কামাল হোসেন।
এর আগে গত শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বামনী ইউপির হামছাদী-কাজির দিঘিরপাড় আলিম মাদরাসার দশম শ্রেনীতে ক্লাশ চলাকালীন সময় ক্লাস রুমের সামনের বারান্দায় ৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার ঘটনা ঘটে। পরে তারা ক্লাশ না করেই মাদরাসা থেকে বেরিয়ে যায়।
অপরদিকে মাদরাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বীসহ কয়েককজন এর চুল কেটে দেয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানালে পরবর্তীতে মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা তাদের ক্লাশ শেষ করেন।
তবে এ ঘটনায় বেশ কিছু অভিভাক সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন মাদ্রাসার সেই শিক্ষকের প্রতি। পুরো ফেসবুক জুড়ে বিষয়টি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে স্ট্যাটাস দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানান অনেকেই।
অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির জানান, তাদেরকে সপ্তাহব্যাপী সতর্ক করার পরও বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে থাকা ও নীতি নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই কমিটির আমিসহ আরো তিন শিক্ষকের উপস্থিতিতে চুল কেটে দিয়েছি। একটা পক্ষ মাদরাসার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারনা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে রায়পুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপট আর আগেরদিনের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ন ভিন্ন। তাই, সরকারের সকল নীতিমালা মেনেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা উত্তম। তবে, এই ঘটনার কথা আমি জেনেছি এবং শুনেছি যে মাদ্রাসা কমিটি ও সকল শিক্ষকদের সমন্বয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।
অপরদিকে সেই ৬ শিক্ষার্থীর একজন বলেন, আমাদের স্যারের কোন দোষ নেই। স্যার যা কিছু করেছেন আমাদের ভালোর জন্যই করেছেন। এখন আমরা সবাই থানায় এসেছি স্যারকে নিয়ে যেতে।
একজন অভিভাবক বলেন, শিক্ষককে আটকের বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। কেননা, শিক্ষক যা করেছেন আমাদের সন্তানদের মঙ্গলের জন্যই করেছেন। আমরা তাহার মুক্তি চাই।
লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, উক্ত ঘটনায় এক ছাত্রের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।