নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লায় কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগের জের ধরে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর ও সোন্দড়া গ্রামের ৫টি মন্দিরে ব্যাপক ভাংচুর করেছে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা।
বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুখোঁশধারী ৩০/৪০জনের একটি গ্রুপ মন্দিরের হামলা ও ভাংচুর চালায় বলে জানান, পূজা পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, জেলা পুলিশ সুপার ড. এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান (পিপিএম সেবা) রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা ও রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

শ্রীরামপুর সার্বজনিন সনাতন হরিসভা বাড়ীর দধি সরকারের ছেলে উত্তম ঘোষাল জানান, রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় মুখোঁশ পরিহীত একদল লোক উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে লোহার রড, বাঁশ নিয়ে তাদের মন্দিরে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা শ্রীরামপুর সার্বজনিন সনাতন হরিসভা মন্দিরের গৌর-নিতাই, রাধা-গোবিন্দ ভাংচুর করে। একই বাড়ীর কালিতলা হরিসভা মন্দিরের গৌর-নিতাই ও শিবের বিগ্রহ ভাংচুর করে তারা।
একই গ্রুপ শ্রীরামপুর রক্ষা কালী মন্দিরের রক্ষা কালীর বিগ্রহ, সোন্দড়া রাজেন্দ্র কুরী বাড়ীর রাধা-গোবিন্দ ও গৌর নিতাই’র প্রতীমা, শ্রীরামপুর সার্বজনিন শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মন্দিরেও (পাগলার বাড়ী) তাণ্ডবলীলা চালায়।
তাদের হটাৎ আক্রমনে বাড়ীর লোকজন দিশেহারা হয়ে যায়। সবার চিৎকারে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারীরা স্থান ত্যাগ করে।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীর রঞ্জন সাহা জানান, রামগঞ্জ উপজেলায় এবার মোট ১৯টি স্থানে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও ভাংচুরকৃত মন্দিরগুলোতে দূর্গাপূজা হচ্ছেনা। যতগুলো মন্দির ও প্রতীমা ভাংচুর করা হয়েছে সে-সব মন্দিরে পূজা অর্চণা বন্ধ থাকলেও এ ধরনের হামলার ঘটনায় আমরা বিস্মিত। আমরা প্রশাসনের নিকট সঠিক বিচার প্রার্থণা করছি।
জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত চলছে। নির্বিঘ্নে পূর্জা শেষ করতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ স্থানীয়দের সহযোগীতাও চান জেলা প্রশাসক।
পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান (পিপিএম সেবা) জানান, কোন অবস্থাতেই দূর্বৃত্তদের ছাড় দেয়া হবে না। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা মণ্ডপে আলাদা আলাদা করে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে। মন্দির ও প্রতীমা ভাংচুরকারীদের শনাক্তেও তদন্ত চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা জানান, এ উপজেলার মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজীর চমৎকার। অথছ একটি মহল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে এহেন নেক্কারজনক কাজ করেছে, যা দুঃখজনক।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে পুলিশ তদন্তে অনেক দুর এগিয়েছে। এ ব্যপারে রামগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।