রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:
স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত রামগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্যটি দীর্ঘদিন যাবত অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে।
সংস্কার ও দেখভালের অভাবে দৃষ্টি নন্দন এ ভাস্কর্যটি নষ্ট হচ্ছে। শ্বেতবর্ণের এ ভাস্কর্যটির গায়ে শেওলা ও ধুলোবালি জমে কালো রঙ ধারণ করেছে। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্যটির বেষ্টনীর ভেতর ও বাহিরে আগাছা জন্মেছে।
এতে করে মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরব গাঁথা বীরত্বের ইতিহাসের মর্যাদাকে অবমাননা করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় লোকজনসহ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
রামগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম আঙ্গারপাড়া জোড় কবর নামক স্থানের উত্তরে, শিশুপার্ক ও রেষ্টহাউজ সংলগ্ন রামগঞ্জের প্রবেশদ্বারে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০০৬ইং সনে নির্মিত হয় এ ভাস্কর্যটি।
লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়া ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন । সামনে নামকরণ ও উদ্বোধনী তারিখ সম্বলিত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। পরে জোট সরকারের পট-পরিবর্তনের পর ভাস্কর্যটির ভিত্তিপ্রস্তর থেকে একটি কুচক্রী মহল রাতের অন্ধকারে শ্বেতপাথরে খোদাইকৃত নামফলক খুলে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। চার কোণা বিশিষ্ট ভাস্কর্যটির ওপরের অংশে পাথর খোদাইকৃত ৩ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য দন্ডায়মান রয়েছে। রামগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহনকারী বাইপাস সড়কের মোড়ের এ ‘মুক্তিযোদ্ধা’ ভাস্কর্যটির যথাযথ সংরক্ষণ ও মর্যাদা রক্ষায় যেন কারো নজরদারী নেই।
রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ জানান, শুধুমাত্র ভাস্কর্যে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছবি থাকার কারনে বিগত ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে কোন দফতর থেকেই সংস্কার বা রক্ষায় কোন উদ্যেগ নেয়া হয়নি।
একই কথা জানালেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জানান, এখন ভাস্কর্যের ব্যপারে কথা বললেও বিপদ। লক্ষ লক্ষ টাকা খরছ করে দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপত্যটি নির্মান করা হলেও শুধুমাত্র দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে চারদিকে জঙ্গলে সয়লাভ হয়ে গেছে।
কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুল আহসান নোমানী জানান, আমি একবার ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করে স্থাপত্যটি রক্ষায় ছাত্রদল এগিয়ে আসলেও শেষ পর্যন্ত তারা কাজ শেষ করতে পারেনি।
এত সুন্দর একটি স্থাপত্য যা, রামগঞ্জ শহরের প্রবেশদ্বারে অনেকের হিংসার কারন হিসাবেও তিনি উল্লেখ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপ্তি চাকমা জানান, বিষয়টি আমার নজরে পড়েছে। তাছাড়া আমি রামগঞ্জ উপজেলায় যোগদান করার পর সোনাপুর চৌরাস্তায় বিজয়স্তম্ভ থাকার কারনে সেখানেই বিজয় দিবস বা স্বাধীনতা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।