সাখাওয়াত হোসেন: রামগঞ্জ থানা পুলিশের উদ্যোগে বদলিজনিত বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হককে বরণ অনুষ্ঠান শুক্রবার রাতে থানা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: জহিরুল হকের সভাপতিত্বে এবং উপ-পরিদর্শক অলি উল্যাহ ও সাংবাদিক মাহমুদ ফারুকের যৌথ সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম রুহুল আমিন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুরাইয়া আক্তার শিউলি, ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান, কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন খান, রামগঞ্জ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আকবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন সেলিম, সোনাপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি লিয়াকত হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মো: রফিকউল ইসলাম, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আবুল কাশেম মাষ্টার, থানার উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন কবির, উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন, সহকারী উপ পরিদর্শক আহম্মেদ পেয়ার, নোয়াব আলী, কনস্টেবল মো: মোস্তফা। এছাড়াও এতে রামগঞ্জের সকল সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তরা বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যকাল নিয়ে আলোচনা করে বলেন, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন তার কর্মের মাধ্যমে জনসাধারাণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। বিদায়ী অনুষ্ঠানে রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের উপস্থিতি আর চোখে জল এক হৃদয় নিংড়াঁনো বিরল দৃষ্টান্ত।
বক্তারা নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক ইমদাদের বিগত দিনের কাজের মূল্যায়ন করে বলেন, তিনি ইতিমধ্যে রামগঞ্জ থানাধীন মোহাম্মদীয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ছিলেন। অপরাধ নিরসনে অগ্রণী ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছেন।
নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক ইমদাদ তার বক্তব্যে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সদ্য বদলিপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিগত আড়াই বছরের অধিক সময় আপনাদের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। দীর্ঘ এ সময়ে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি আমার কর্তব্য এবং সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আপনাদের যাপিত দিনগুলো শান্তিময় করতে। এখানকার সাধারণ মানুষ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা পুলিশের সব ধরনের ভালো কাজে সহযোগীতা করেছেন। এ উপজেলায় যে কোন পরিস্থিতিতে কাজ করে সফলতা আনা সম্ভব। আইনের প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল। কারো সহযোগিতা ছাড়া একা একজন ওসি’র বা পুলিশের পক্ষে মানবিক পুলিশ হওয়া সম্ভব নয়। এসময় তিনি আয়োজিত সংবর্ধণা ও বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আপনাদের সহযোগীতা নিয়েই শক্তহাতে বিভিন্ন ধরনের গুজবের মোকাবেলা করেছি। বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং প্রতিরোধে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনকে সুদৃঢ় করার চেষ্টা করেছি। ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বেই ছিলো আমার এ প্রচেষ্টা। আর এ প্রচেষ্টায় একনিষ্ঠ প্রেরণা যুগিয়েছেন আমার মান্যবর লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান (পি.পি.এম সেবা) এবং রামগঞ্জ উপজেলার প্রিয় সাংসদ ড. আনোয়ার হোসেন খান।
একই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সুযোগ্য নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা ও সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহানসহ আমার সহকর্মী, বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষকে।
উল্লেখ্য ২০১৯ ইং সনে রামগঞ্জ থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন সন্দীপের সন্তান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। পুলিশি দায়িত্বের পাশাপাশি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও লোকদের নিয়ে কাজ করেন। যোগদানের কিছুদিন পরেই হানা দেয় করোনা ভাইরাস। স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার পরিজনকে ছেড়ে করোনা প্রতিরোধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে রাতদিন চষে বেড়িয়েছেন হাঁট-ঘাট-মাঠ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে। করোনাকালীন সময়ে লাশ দাফন টীমকে সহযোগীতা, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবাদান, ছিন্নমূল মানুষদের খাবার ব্যবস্থা, মাদক নির্মূলে কঠোর হস্তক্ষেপ, রামগঞ্জ থানা এলাকা সু-সজ্জিতকরণসহ বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রমের কারনে উপজেলাবাসী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে করোনাযোদ্ধা হিসাবে আখ্যায়িত করেন।