মাহমুদ ফারুক: ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিক্সার কারনে অতীষ্ট রামগঞ্জ শহরবাসী। সরকারী কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্রে গড়ে উঠেছে এসব অটোরিক্সা গ্যারেজ।
অপরদিকে শত শত অটোরিক্সার কারনে শহরের পুলিশ বক্স চত্বর, রামগঞ্জ মাছ বাজার ও হসপিটাল সড়ক, সোনাপুর চৌরাস্তা, রামগঞ্জ মৌলভী বাজার ও জিয়া শপিং কমপ্লেক্স গেইট সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা জানজট লেগেই থাকে।
যত্রতত্রে পার্কিয়ের কারনে ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে হাটচলা করাও দায় হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীর।
বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী জাহীদ হাসান পাবেল জানান, অধিকাংশ অটোরিক্সা চালকের কোন লাইসেন্স নেই। আর যদ্দুর জানি এদেরকে উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ বা পৌর কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স দেয়ারও ক্ষমতা রাখে না। অটোরিক্সা চলতে কোন বাধা না থাকায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুরাও এখন অটোরিক্সা চালাচ্ছেন। শহরে সড়কগুলোতে শত শত অটোরিক্সা।
এসময় তিনি দাবী করেন, একটি মহল অবৈধভাবে রিক্সা সমিতি বা অটোরিক্সা সমিতির নামে টাকা উত্তোলন করে আসছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।
রাসেল মাহমুদ মাসুম জানান, আমি শনিবার সকালে আমি ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে রামগঞ্জ শহরের সোনাপুর চৌরাস্তায় এসে জানজটের কবলে পড়ি। শত শত ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, বালুর ট্রাক। সব মিলিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক গাড়ীতেই বসে ছিলাম। বাধ্য হয়ে গাড়ী থেকে নেমে বাকী পথ হেঁটে চলে আসি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রামগঞ্জ উপজেলায় কতশত অটোরিক্সা তা মনে হয় রামগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষও জানে না। এসময় তারা আরো জানান, একটি মহলকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে অটোরিক্সা সড়কে চলতে অনুমতি দেয়া হয়। আর সমিতির মাধ্যমে উত্তোলনকৃত এসব টাকার ভাগ পাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাকর্মীরা।
সরেজমিনে রামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রামগঞ্জ পুলিশ বক্স চত্বর, খাদ্যগুদাম গেইট, বাইপাস সড়কের প্রতিটি হসপিটালের সামনে, নুরপ্লাজা চত্বর, জিয়া শপিং কমপ্লেক্স গেইট, দক্ষিণ বাজার, মাছবাজার, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গেইট, পুরাতন মাছ ও কাঁচা বাজার, সাবরেজিস্ট্রি অফিস গেইট, মডেল স্কুল চৌরাস্তা, সোনাপুর মৌলভী বাজার, সোনাপুর চৌরাস্তা, সোনাপুর পুরাতন বাজার, মোরগহাঁটা এলাকাসহ অর্ধশতাধীক এলাকায় অটোরিক্সা পার্কিং এলাকা।
রামগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত ট্রাফিক পরিদর্শক আশরাফুল আলম জানান, আমার জানা নেই কিভাবে অটোরিক্সা বা ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা সড়কে চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কেউ জানে না রামগঞ্জ শহরে এত অটোরিক্সা কিভাবে চলে
রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী জানান, আমরা পায়েচালিত রিক্সার ব্যপারেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা কিভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে বা কিভাবে সড়কে চলছে সে ব্যপারে আমি কিছুই জানি না।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমদাদুল হক জানান, আমি কয়েকদিন আগে রামগঞ্জ থানায় যোগদান করেছি। খোঁজ খবর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মেয়র মহোদয়ের সাথে সমন্বয় করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপ্তি চাকমা জানান, শহরে প্রচুর অটোরিক্সা। বেশিরভাগই ব্যাটারিচালিত। মেয়র সাহেবের সাথে কথা বলে শীগ্রয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।