নিজস্ব প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পানিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফল দুইদিন পর পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলাফল সংশোধন করে পরাজিত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করায় এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিষ্পোরনের ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় পানিয়ালা বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
তবে ফলাফল পাল্টে দেওয়ার বিতর্কিত অভিযোগ থাকলেও দিনশেষে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হলেন লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান। আজ রবিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকগণ।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারী ২০২২ইং) উপজেলার পানিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন শেষ হয়। নির্বাচন ও ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করে গ্যাজেট প্রকাশ করেন।
গোপন ব্যালটে ১৫৭ ভোট পেয়ে ইব্রাহীম খলিল ১ম, ১৫০ ভোট পেয়ে মোঃ রফিকুল ইসলাম ২য়, ১৪৭ ভোট পেয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ৩য় ও ১৪৭ ভোট পেয়ে মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ৪র্থ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নির্বাচিত ৪ জন সাধারণ সদস্য, ১ জন মহিলা সদস্য, ১ জন দাতা সদস্য ও ৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করার বিধি রয়েছে। সভাপতি পদে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, আল মদিনা ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন পাটওয়ারী, রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ফয়সাল মাল প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
নির্বাচিত সদস্য মোঃ মোজাম্মেল হোসেন শনিবার রাত ১০টায় সাংবাদিকদের জানান, শনিবার দুপুরে আমাদেরকে না জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পূনরায় ভোট গণনা করা হয়। পূনরায় ভোট গণনা শেষে আমাকে ষড়যন্ত্রমূলক বাদ দিয়ে ভোটে পরাজিত প্রার্থী হুমায়ুন কবীরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের দিন সবার উপস্থিতিতে ভোট গণনা শেষে নির্বাচিত নাম ঘোষণা করে ফলাফল বিবরণীতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্বাক্ষর দিয়ে আমাদের হাতে গ্যাজেট তুলে দেয়ার দুইদিন পর কিভাবে ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকদের কাছে।
এব্যাপারে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, পূনরায় ভোট গণনায় প্রার্থীদের নোটিশ করা হয় নাই, তবে সকল প্রার্থীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) উপস্থিতিতে পূনরায় ভোট গণনা করা হয়। নির্বাচনের পর গ্যাজেট প্রকাশ হওয়া সত্বেও কেন পূনরায় ভোট গণনা করা হচ্ছে এ প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে তিনি বলেন এতে আমার কিছু করার নেই।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, শনিবার রাতে পানিয়ালা বাজারে কিছু হট্টগোল হয়েছে। পরে টহল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন এর বাহিরে কিছু বলতে পারবো না।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা জানান, ভোটের দিন রাতে পূনরায় ভোট গণনা করতে সদস্য প্রার্থী হুমায়ুন কবীর উপজেলা প্রশাসনের নিকট একটি ভোট গণনায় সু-নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ দায়ের করে একটি আবেদন দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সকল প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে। এতে অনেকেই আসেননি। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পূনরায় ভোট গণনা শেষে ৪ ভোটের ব্যবধানে হুমায়ুন কবীর বিজয়ী লাভ করায় মোজাম্মেল হোসেন বাদ পড়েছেন।