রায়হান মিঠু, সাভার:
আজ ৩ ডিসেম্বর, ৩১তম আন্তর্জাতিক ও ২৪তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য পরিবর্তনমুখী পদক্ষেপ : প্রবেশগম্য ও সমতাভিত্তিক বিশ্ব বিনির্মাণে উদ্ভাবনের ভূমিকা।
১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে। শারীরিকভাবে অসম্পূর্ণ মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা প্রদর্শন ও তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই দিবসটির সূচনা হয়।
দিবসটি পালনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উন্নয়নের মূলধারায় প্রতিবন্ধীদের একীভূতকরণ এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেশব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দেশের প্রতিটি জেলায় সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে স্পাইনাল কর্ড ইনজুরিস’ ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিডাব) এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আনোয়ার হোসেন বলেন,প্রতিবন্ধী মানুষ সমাজের অংশ। সমাজের ১০% প্রতিবন্ধী মানুষকে আলাদা রেখে রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সমাজে তাদের শিক্ষার সুব্যস্থা করা, সকলক্ষেত্রে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি করা এবং সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত কল্পে সরকারী এবং বেসরকারী পর্য়ায়ে উন্নয়নে আধুনিক প্রবেশগম্য পরিবেশ তৈরী করতে সরকারী ও বেসরকারী পর্য়ায়ে পদক্ষেপ, বিকল্প পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই প্রতিবন্ধীরা জাতীয় উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাথতে সক্ষম হবে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে অবহেলার চোখে না দেখে, শারীরিক কাঠামোর কথা বিবেচনা না করে, তার দক্ষতা ও দক্ষতা তৈরীতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় সকল কর্মকান্ডে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমঅংশগ্রহণ, সমসুযোগ, সমঅধিকার নিশ্চিত কল্পে সরকারী ও বেসরকারী পর্য়ায়ে উন্নয়নের ‘টেকসই এবং স্থায়িত্বশীল’ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। সরকারী উন্নয়ন পরিকল্পনায় জাতীয় এ্যাকশন প্লেনে টেকসই এবং স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের কাঠামো তৈরী করে বাজেট প্রণয়ণ বা বরাদ্দ করতে হবে এবং কার্য়ক্রম বাস্তবায়নে দেশে সরকারী, এনজিও পর্য়ায়ে যোগ উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যাতায়ত ব্যবস্থা সহজ এবং প্রবেশগম্য করতে পরিবহন সেক্টরকে ঢেলে সাজাতে হবে। সকল প্রকার যোগযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ এবং প্রবেশগম্য করতে স্ব্স্ব এরিয়ায় সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সকল প্রকার নাগরিকের উপযোগী পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং সর্বক্ষেত্রে প্রবেশগম্য পরিবেশ বিবেচনায় রেখে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করতে হবে।
রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে শতভাগ মানুষের অংশগ্রহণ প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে সুদীর্ঘ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় অন্তরভূক্ত করা এখন সময়ের দাবী। প্রতিবন্ধী মানুষের সফলতাকে ছোট করে না দেখে, সফলতা গল্প জাতীয় মিডিয়া এবং ফেসবুক মিডিয়ায় প্রচার কার্য়ক্রমকে আরো বেশী সক্রিয় এবং জোরদার করে তুলতে হবে।
পরিশেষে বলবো সম-অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারী পযায়ে সুর্নিদিষ্ট পরিকল্পনা বড়ই প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অংশগ্রহণের বাঁধা গুলো দূর করলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমঅধিকার নিশ্চিত কল্পে দেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় একধাপ এগিয়ে যাবে। আসুন আমরা দিবসের দিকে তাকিয়ে প্রতিবন্ধী মানুষের উন্নয়নে সবাই মিলে একসাথে বছর ধরে তাদের উন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করি।